Sun Sun Sun Sun
E-newsletter: February 2014
 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে Public Health On Top

মৃত্যু বিপণন-১ Death Marketing-1

মৃত্যু বিপণন-২ Death Marketing-2

Death Marketing Around

 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে

তামাকজনিত মৃত্যু প্রতিরোধযোগ্য, এই মৃত্যু কারো কাম্য নয়। অথচ তামাক কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত এই মৃত্যুই ফেরি করে চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বাংলাদেশে তামাকজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বছরে ৫৭,০০০ (২০০৪)। উল্লেখ্য, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় রাষ্ট্র `ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন’ প্রণয়ন করে ২০০৫ সালে, যা ২০১৩ সালে সংশোধন করে আরও যুগপোযোগী করা হয়। তবে, জনস্বাস্থ্যের রক্ষাকবজ এই আইনটি সংশোধনের বিভিন্ন পর্যায়ে নানাভাবে বাধা প্রদান করেছে তামাক কোম্পানিগুলো। আইনের বিভিন্ন ধারা দুর্বল করার ক্ষেত্রেও কাজ করেছে তারা এবং দু-একটি ক্ষেত্রে সফলও হয়েছে। আইনটি পাশ হওয়ার পর এখন চলছে বাস্তবায়ন ও বিধিমালা প্রণয়ন ব্যহত করতে নানাবিধ হস্তক্ষেপ। একথা সত্য যে, তামাক কোম্পানির ব্যবসা যতদিন থাকবে, ততদিন হস্তক্ষেপও থাকবে। তামাক কোম্পানির মুখোশ উন্মোচনও তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মকাণ্ডের অপরিহার্য অংশ হিসেবে অব্যাহত রাখতে হবে। টোবাক্যো ইন্ডাস্ট্রি ওয়াচ বিডি তামাক কোম্পানির জনস্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এরকম নানাবিধ কর্মকাণ্ড জনসমক্ষে তুলে ধরার একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।

প্রজ্ঞা’র মিডিয়া মনিটরিং তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও টোবাক্যো ইন্ডাস্ট্রি ওয়াচ বিডি টিমের পর্যবেক্ষণ থেকে দেখা যায়, এসময়ে (জানুয়ারি, ২০১৪) তামাক কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ধরনের আগ্রাসি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে। চাষিদেরকে নানাধরনের কৃষি-প্রণোদনা (সার, বীজ, কীটনাশক) প্রদানের মাধ্যমে তামাক চাষে উৎসাহিত করা, অগ্রীম অর্থ দিয়ে চাষিদেরকে ঋণের জালে আটকে ফেলে বছরের পর বছর তামাকচাষে বাধ্য করা, সংরক্ষিত বনভূমি ও নদীর তীরে তামাক চাষ সম্প্রসারণ, উত্তরবঙ্গের দু’টি জেলাকে (নীলফামারী, লালমনিরহাট) নতুন করে তামাকচাষের আওতায় নিয়ে আসা, তামাকপণ্যের বিক্রয়কেন্দ্র সজ্জিতকরণে অর্থায়ন অর্থাৎ সিগারেটের প্যাকেট প্রদর্শনের জন্য বিক্রেতাকে মাসিক চুক্তিতে অর্থ প্রদান, বিধিমালা প্রণয়নে সময়ক্ষেপণ করতে সরকারকে প্ররোচিত করা, উদ্দেশ্য-প্রণোদিতভাবে বিধিমালা প্রণয়ন প্রক্রিয়াকে হেয় করে মিডিয়াতে রিপোর্টিং, প্যাকেটে ছবিযুক্ত সতর্কবাণী প্রচলনের জন্য ৬ মাসের পরিবর্তে ১৮ মাস সময় চেয়ে উচ্চমহলে লবিং করা, দু’টি মধ্যম মুল্যস্তরের সিগারেট ব্রান্ডকে নিম্ন মূল্যস্তর ঘোষণা দিয়ে ১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির বাজে রেকর্ড সৃষ্টি, ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তামাক কোম্পানির এসব মৃত্যু-বিপণন কূটকৌশল উন্মোচন করতেই সাজানো হয়েছে এবারের সংখ্যা।

তামাক কোম্পানির বেশি ব্যবসা মানে, বেশি মানুষের মৃত্যু। এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু রুখতে হবে। এক্ষেত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সঠিক ও কার্যকর বাস্তবায়নই সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এছাড়া তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি তামাক কোম্পানির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতে নীতি-নির্ধারকদের সক্রিয়তা অতীব জরুরি। তবেই আমাদের নিরীহ চাষিরা তামাক কোম্পানির ফাঁদ-মুক্ত হবে, তামাক চাষ নিয়ন্ত্রিত হবে। বন্ধ হবে তামাকের বিজ্ঞাপন-প্রচারণা। পরোক্ষ ধূমপান থেকে রক্ষা পেয়ে বেড়ে উঠবে আগামী প্রজন্ম। সর্বোপরি জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত হবে। এটাই সবার প্রত্যাশা।