Sun Sun Sun Sun
E-newsletter: April 2020
 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে Public Health On Top

মৃত্যু বিপণন-১ Death Marketing-1

মৃত্যু বিপণন-২ Death Marketing-2

Death Marketing Around

 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে

 

ভয়াবহ কোভিড-১৯ মহামারীতেও থেমে নেই তামাক কোম্পনির মৃত্যুবিপণন। বাংলাদেশে দুইটি বহুজাতিক তামাক কোম্পানি সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে বিশেষ নির্দেশনা আদায় করে সিগারেট উৎপাদন, বিপণন ও তামাক পাতা ক্রয় অব্যাহত রেখেছে। করোনা সংকটকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের কলুষিত ইমেজ আড়াল করতে ছদ্মবেশী দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করছে তারা। একইসাথে এসমস্ত কার্যক্রম নিজেদের এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেইজে সুকৌশলে ছড়িয়ে দিয়ে নীতি নির্ধারকদের আকৃষ্ট করার কাজও চালানো হচ্ছে। লকডাউনের মধ্যে সারাদেশে নির্বিঘ্নে বিপণন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে স্থানীয় প্রশাসনকে সুরক্ষাসামগ্রী প্রদান করছে তামাক কোম্পাুিনগুলো। শুধু তাই নয়, করোনাকালে নিজেদের ব্রান্ড ইমেজ প্রচারের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেইজে লাইভ টকশোতে অংশ নিচ্ছে তামাক কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ

বিশ্বব্যাপী বিভ্রান্তি ছড়াতেও মরিয়া হয়ে উঠেছে তামাককোম্পানিগুলো। ‘করোনা প্রতিরোধে তামাকের ভূমিকা থাকতে পারে’ এমন দাবি করে সম্প্রতি প্রকাশিত দুটি গবেষণার পদ্ধতি (Methodology) এবং বিশ্লেষণ এরই মধ্যে বিতর্কিত এবং প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। জানা গেছে, এই গবেষণা নিবন্ধের মূল লেখক অতীতে তামাক কোম্পানির বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং মোটা অংকের অনুদানও নিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, করোনা প্রতিরোধে তামাকের ভূমিকা রয়েছে- এই দাবির পক্ষে পর্যাপ্ত কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে গণমাধ্যকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, তামাকাসক্তরাই বরং করোনায় অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই সতর্কতা আমলে নিয়ে বাংলাদেশে মহামারী চলাকালীন সময়ে তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন ১০০ জন বিশিষ্ট নাগরিক
আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে তামাক কোম্পানিগুলো দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। বিড়ির ওপর করহার কমিয়ে মহামারীর মধ্যে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে একজন সংসদ সদস্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর নিজেদের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়েছে বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন। করোনা সংকটের মধ্যে রাজস্বের ভয় দেখিয়ে সিগারেট কোম্পানিগুলোর পক্ষে বাজেটে সুবিধা আদায়ের জন্য লবিস্ট ব্যবহার করে গণমাধ্যমে মনগড়া যুক্তি তুলে ধরা হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন এবং প্রায় ৪ কোটি ১০ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজ বাড়িতেই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তামাকের ক্ষতির শিকার এই বিপুল প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী এখন মারাত্মকভাবে করোনাভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের উচিত হবে আসন্ন বাজটে অন্যান্য করপদক্ষেপের সাথে সকল তামাকপণ্যের খুচরামূল্যের উপর ৩ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করা। এতে যে অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে তা সরকার করোনা মহামারী সংক্রান্ত স্বাস্থ্য ব্যয় এবং প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের জন্য ব্যয় করতে পারবে।